অর্থনীতি (একাদশ শ্রেণী)
চ্যাপ্টার 9
অর্থ ও ব্যাংক ব্যবস্থা
প্রশ্ন ১: অর্থ কাকে বলে?
উত্তর: অর্থ হল সর্বজনগ্রাহ্য বিনিময়ের মাধ্যম, অর্থাৎ অর্থ হল এমন বস্তু যার দ্বারা সকলের বিনিময় কার্য সম্পাদিত হয়।
উত্তর: অর্থ হল সর্বজনগ্রাহ্য বিনিময়ের মাধ্যম, অর্থাৎ অর্থ হল এমন বস্তু যার দ্বারা সকলের বিনিময় কার্য সম্পাদিত হয়।
প্রশ্ন ২: অর্থের কাজ কয়টি ও কী কী?
উত্তর: অর্থের কার্যাবলি প্রধানত চারটি:
ক. বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে;
খ. মূল্য পরিমাপের মানদণ্ড;
গ. দেনাপাওনার মানদণ্ড বা মূল্য শোধের মানদণ্ড;
ঘ. সঞ্চয়ের উপায় বা সঞ্চয়ের ভান্ডার।
প্রশ্ন ৩: প্রচলনের ভিত্তিতে অর্থকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
উত্তর: প্রচলনের ভিত্তিতে অর্থকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
ক. প্রকৃত অর্থ
খ. হিসাবনিকাশের অর্থ
প্রশ্ন ৪: প্রকৃত অর্থ কাকে বলে?
উত্তর: প্রকৃত অর্থ বলতে সেই অর্থকে বোঝায় যেটি বাস্তবিকই রয়েছে এবং যেটি ধরাছোঁয়া যায় এবং যা জনসাধারণের মধ্যে হাত বদল হয়।
যেমন-ভারতে যেসব ধাতব মুদ্রা বা কাগজি নোট প্রচলিত রয়েছে।
প্রশ্ন ৫: হিসাবনিকাশের অর্থ কাকে বলে?
উত্তর: হিসাবনিকাশের অর্থ হল সেই অর্থ যার মাধ্যমে হিসাব রাখা হয়। কোনো দেশের হিসাবনিকাশের অর্থ এবং প্রকৃত অর্থ একই হতে পরে। আবার প্রকৃত অর্থ এবং হিসাবনিকাশের অর্থ আলাদাও হতে পরে।
উত্তর: হিসাবনিকাশের অর্থ হল সেই অর্থ যার মাধ্যমে হিসাব রাখা হয়। কোনো দেশের হিসাবনিকাশের অর্থ এবং প্রকৃত অর্থ একই হতে পরে। আবার প্রকৃত অর্থ এবং হিসাবনিকাশের অর্থ আলাদাও হতে পরে।
প্রশ্ন ৬: হিসাবনিকাশের অর্থের উদাহরণ দেও।
উত্তর: আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (International Monetary Fund বা IMF)-এর সকল হিসাব Special Drawings Rights বা SDR নামক মুদ্রায় প্রকাশ করা হয়। বাস্তবে কিন্তু SDR নামে কোনো মুদ্রা নেই। SDR-এর অস্তিত্ব শুধুমাত্র IMF-এর হিসাবের খাতাতেই চালু রয়েছে। এই SDR হল হিসাবনিকাশের অর্থের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
প্রশ্ন ৭: উপকরণ অনুসারে অর্থকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
উত্তর: উপকরণ অনুসারে অর্থকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
ক. ধাতব অর্থ: ধাতব অর্থ বিভিন্ন ধাতু দিয়ে তৈরি। স্বর্ণমুদ্রা, রৌপ্যমুদ্রা, তামার তৈরি মুদ্রা, নিকেলের তৈরি মুদ্রা ইত্যাদি ধাতুর মুদ্রা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় চালু হয়েছে।
খ. কাগজি অর্থ: কাগজের নোটকে কাগজি মুদ্রা বলা হয়।
প্রশ্ন ৮: গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে অর্থকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
উত্তর: গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে অর্থকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
ক. আইনসিদ্ধ অর্থ
খ. ঐচ্ছিক অর্থ
আইনসিদ্ধ অর্থকে আবার দুভাগ ভাগ করা যায়। যথা:
✓ অসীম আইনসিদ্ধ অর্থ
✓ সসীম আইনসিদ্ধ অর্থ
উত্তর: গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে অর্থকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
ক. আইনসিদ্ধ অর্থ
খ. ঐচ্ছিক অর্থ
আইনসিদ্ধ অর্থকে আবার দুভাগ ভাগ করা যায়। যথা:
✓ অসীম আইনসিদ্ধ অর্থ
✓ সসীম আইনসিদ্ধ অর্থ
প্রশ্ন ৯: আইনসিদ্ধ অর্থ কাকে বলে?
উত্তর: আইনসিদ্ধ অর্থ হল এমন অর্থ যার পিছনে আইনের সমর্থন রয়েছে। এই ধরনের অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রহণ করতে সবাই বাধ্য। দেশের সরকার আইনের মাধ্যমে এই অর্থকে প্রচলন করেন এবং আইনের সমর্থন থাকার জন্যই সকলে এই অর্থ নিতে রাজি থাকে। ভারতে প্রচলিত সমস্ত ধাতব মুদ্রা এবং কাগজি নোটই আইনসিদ্ধ অর্থ।
প্রশ্ন ১০: অসীম আইনসিদ্ধ অর্থ কাকে বলে?
উত্তর: যে অর্থের সাহায্যে আইনত যে কোনো পরিমাণ মূল্যের লেনদেন মেটানো সম্ভব তাকে অসীম আইনসিদ্ধ অর্থ বলে।
যেমন-ভারতে এক টাকার নোট ছাড়া সমস্ত কাগজি নোট।
প্রশ্ন ১১: সসীম আইনসিদ্ধ অর্থ কাকে বলে?
উত্তর: যে অর্থ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি দিলে লোকে তা গ্রহণ করতে অসম্মত হতে পারে তাকে সসীম আইনসিদ্ধ অর্থ বলে।
যেমন-ভারতে প্রচলিত সমস্ত ধাতবমুদ্রা।
প্রশ্ন ১২: ঐচ্ছিক অর্থ কাকে বলে?
উত্তর: ঐচ্ছিক অর্থের ক্ষেত্রে ঐ অর্থ গ্রহণ করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কোনো ব্যক্তি ঐচ্ছিক অর্থ গ্রহণ করতে রাজি নাও হতে পারে। এটা গ্রহণ করা বা না করা তার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
যেমন-বাণিজ্যিক ব্যাংকের চলতি হিসাব বা সঞ্চয়ী হিসাবে জমা অর্থ হল ঐচ্ছিক অর্থের উদাহরণ।
প্রশ্ন ১৩: পদমর্যাদার ভিত্তিতে অর্থকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
উত্তর: পদমর্যাদার ভিত্তিতে অর্থকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
ক. প্রামাণিক অর্থ
খ. টোকন অর্থ বা নিদর্শন অর্থ
প্রশ্ন ১৪: প্রামাণিক অর্থ কাকে বলে?
উত্তর: প্রামাণিক অর্থ হল সেই অর্থ যার দ্রব্যমূল্য বা অন্তর্নিহিত মূল্য এবং অর্থ হিসাবে এর মূল্য পরস্পর সমান।
প্রশ্ন ১৫: টোকন অর্থ বা নিদর্শন অর্থ কাকে বলে?
উত্তর: টোকন অর্থের ক্ষেত্রে এর অন্তর্নিহিত মূল্য বা দ্রব্য মূল্য, অর্থ হিসাবে এর মূল্য অপেক্ষা কম। অন্যভাবে বলতে গেলে, টোকন অর্থের ক্ষেত্রে মুদ্রিত মূল্য অন্তর্নিহিত মূল্য অপেক্ষা বেশি হয়।
যেমন - 1 টাকার কয়েন; 1, 2, 5, 10, 20, 50, 100, 200, 500, 2000 টাকার নোট।
প্রশ্ন ১৬: ব্যাংক কাকে বলে?
উত্তর: যে সমস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান চাইবার মাত্র অর্থ ফেরৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে অর্থ জমা রাখে এবং সেই অর্থ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ হিসাবে প্রদান করে, সেই সমস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেই ব্যাংক বলে।
প্রশ্ন ১৭: বাণিজ্যিক ব্যাংক কাকে বলে?
উত্তর: যে সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে জনসাধারণ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করে ও আমানতকারীদের ঐ আমানতের অর্থের একটি অংশ চেকের মাধ্যমে তুলে নেওয়ার সুযোগ দেয়, এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে থাকে, সেই সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক ব্যাংক বলে।
প্রশ্ন ১৮: বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাজগুলি কি কি?
উত্তর: বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাজগুলি হল:
ক. আমানত গ্রহণ করা;
খ. ঋণদান করা;
গ. গ্রাহকদের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করা;
ঘ. আমানত সৃজন করা;
ঙ. আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সাহায্য করা।
প্রশ্ন ১৯: কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাকে বলে?
উত্তর: যে ব্যাংক দেশের ব্যাংক ব্যবস্থার শীর্ষে অবস্থান করে দেশের আর্থিক নীতি নির্ধারণ করে ও অর্থনৈতিক স্থিতশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে তাকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলা হয়।
যেমন-Reserve Bank of India (RBI)
প্রশ্ন ২০: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজগুলি কি কি?
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজগুলি হল:
ক. নোট প্রচলনের একচ্ছত্র অধিকার;
খ. নিকাশি ঘরের কাজ;
গ. ব্যাংকগুলির ব্যাংকের হিসাবে কাজ;
ঘ. ঋণ নিয়ন্ত্রণ;
ঙ. বৈদেশিক বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণ;
চ. অর্থনৈতিক বিকাশে সহায়তা;
ছ. সরকারের ব্যাংকের হিসাবে কাজ;
জ. সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রার জাতীয় রিজার্ভ গচ্ছিত রাখা।
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজগুলি হল:
ক. নোট প্রচলনের একচ্ছত্র অধিকার;
খ. নিকাশি ঘরের কাজ;
গ. ব্যাংকগুলির ব্যাংকের হিসাবে কাজ;
ঘ. ঋণ নিয়ন্ত্রণ;
ঙ. বৈদেশিক বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণ;
চ. অর্থনৈতিক বিকাশে সহায়তা;
ছ. সরকারের ব্যাংকের হিসাবে কাজ;
জ. সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রার জাতীয় রিজার্ভ গচ্ছিত রাখা।
প্রশ্ন ২১: কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে পার্থক্য লিখো।
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল:
ক. বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির মূল লক্ষ্য মুনাফা অর্জন করা। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালিত হয় জাতীয় স্বার্থে; মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে নয়।
খ. কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট ছাপানোর ক্ষমতা রাখে। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাংকের নোট ছাপানোর ক্ষমতা নেই।
গ. বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি জনসাধারণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক জনসাধারণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে না।
প্রশ্ন ২২: কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শেষস্তরের ঋণদাতা বলা হয় কেন?
উত্তর: কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের হটাৎ যদি অর্থের প্রয়োজন হয় তাহলে অন্য কোনো সূত্র থেকে ঋণ না পেলে বাণিজ্যিক ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে উপস্থিত হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাকে অবশ্যই ঋণ দিয়ে সাহায্য করে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির অগতির গতি বা শেষস্তরের ঋণদাতা বলা হয়।
প্রশ্ন ২৩: চলতি আমানত কাকে বলে?
উত্তর: যে ক্ষেত্রে চাহিদামাত্র জমা টাকা তোলা যায় তাকে চলতি আমানত বলে।
প্রশ্ন ২৪: মেয়াদী আমানত বা স্থায়ী আমানত কাকে বলে?
উত্তর: যে ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় উত্তীর্ণ হওয়ার আগে টাকা তোলা যায় না তাকে মেয়াদী আমানত বা স্থায়ী আমানত বলে।
প্রশ্ন ২৫: পৌনঃপুনিক আমানত কাকে বলে?
উত্তর: যে ক্ষেত্রে আমানতকারীকে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর নির্দিষ্ট টাকা জমা দিতে হয় এবং নির্দিষ্ট মেয়াদ উত্তীর্ণ না হলে সেই টাকা তোলা যায় না তাকে পৌনঃপুনিক আমানত বলে।
প্রশ্ন ২৬: ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংককে ব্যাংক হিসেবে ধরা হয় না কেন?
উত্তর: ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংককে ব্যাংক হিসেবে ধরা হয় না কারণ এরা সঞ্চিত আমানতগুলি জনসাধারণকে ঋণ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করে না।
প্রশ্ন ২৭: স্থির আমানত এবং সঞ্চয়ী আমানতের মধ্যে কোনটি থেকে বেশি সুদ পাওয়া যায়?
উত্তর: স্থির আমানত থেকে সঞ্চয়ী আমানতের তুলনায় বেশি সুদ পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ২৮: অর্থের যোগান কাকে বলে?
উত্তর: একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো দেশের কাগজি নোট, ধাতব মুদ্রা ও ব্যাংক আমানতের সমষ্টিই হল সেই দেশের মোট অর্থের যোগান।
প্রশ্ন ২৯: আর্থিক মধ্যস্থ সংস্থা কাকে বলে?
অথবা,
অ-ব্যাংক মধ্যবর্তী আর্থিক প্রতিষ্ঠান কাকে বলে?
উত্তর: যে সব সংস্থা সঞ্চয়ী জনগণ ও বিনিয়োগকারী জনগণের মধ্যে মধ্যস্থতা করে, উভয়ের মধ্যে একটি সংযোগস্থাপন করে তাকে আর্থিক মধ্যস্থ সংস্থা বলে।
প্রশ্ন ৩০: ভারতের দুটি অ-ব্যাংক মধ্যবর্তী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নাম লিখো।
উত্তর: ভারতের দুটি অ-ব্যাংক মধ্যবর্তী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নাম হল:
ক. Life Insurance Corporation of India (LICI)
খ. Unit Trust of India (UTI)
প্রশ্ন ৩১: NABARD কী?
উত্তর: NABARD বা National Bank for Agriculture and Rural Development ভারতে কৃষিক্ষেত্রে ঋণের জোগান দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ব্যাংক।
প্রশ্ন ৩২: মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) কাকে বলে?
উত্তর: যে পরিস্থিতিতে দ্রব্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধির তুলনায় অর্থ ও ব্যাংক ঋণের পরিমাণ অর্থাৎ অর্থের যোগান অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পায় এবং ফলে সাধারণ দামস্তরের যথেষ্ট ও ক্রমাগত বৃদ্ধি ঘটে সেই পরিস্থিতিকে মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) বলা হয়।
অর্থাৎ, অর্থের যোগান বৃদ্ধি পেয়ে দামস্তরের ক্রমাগত বৃদ্ধি ঘটলে তাকে মুদ্রাস্ফীতি বলে।
প্রশ্ন ৩৩: সুদ কাকে বলে?
উত্তর: নির্দিষ্ট সময় মেয়াদের জন্য কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ ধার নিলে তার জন্য যে বাড়তি অর্থ প্রদান করে তাকেই সুদ বলা হয়।
প্রশ্ন ৩৪: মোট সুদ ও নীট সুদ কাকে বলে?
উত্তর: ঋণদাতা ঋণদানের পরিবর্তে যে সুদ পায় তাকেই মোট সুদ বলে।
মোট সুদ থেকে অন্যান্য আয় ও কিছু বিষয় যেমন - ঋণ দেওয়ার ঝুঁকি, লেনদেন বাবদ হিসাবপত্র, ঋণ আদায়ের জন্য তাগাদা দেওয়ার ব্যয় ইত্যাদি বাদ দিলে যা থাকে তাই হল নীট সুদ।
প্রশ্ন ৩৫: সুদের হার নির্ধারণের ক্লাসিক্যাল তত্ত্বটি কি?
উত্তর: ক্লাসিক্যাল তত্ত্বে সুদের হার মূলধনের চাহিদা ও যোগানের দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং এই মূলধনের চাহিদা ও যোগান বাস্তব উৎপাদন দ্বারা গঠিত হয় বলে এই ক্লাসিক্যাল তত্ত্ব সুদের প্রকৃতি বা বাস্তব তত্ব নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ৩৬: মৌলিক সুদের হার (বা Prime Lending Rate বা PLR) কাকে বলে?
উত্তর: ব্যাংক যখন ঋণ দিচ্ছে তখন যদি কোনো ঝুঁকি না থাকে তাহলে সেই ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক যে সুদের হার আদায় করে তাকে মৌলিক সুদের হার (বা Prime Lending Rate বা PLR) বলে।
প্রশ্ন ৩৭: রেপো রেট (Repo Rate) কাকে বলে?
উত্তর: বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি স্বল্পকালে ঋণপত্র বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে যখন অর্থ নেয় এই শর্তে যে নির্দিষ্ট সময় বাদে ব্যাংকগুলি ঐ ঋণপত্র পূর্ব নির্ধারিত দামে পুনরায় কিনে নেবে তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঐ ঋণপত্রের উপর যে সুদের হার আদায় করে তাকে রেপো রেট (Repo Rate) বলে।
প্রশ্ন ৩৮: রিভার্স রেপো রেট (Reverse Repo Rate) কাকে বলে?
অথবা,
বিপরীত রেপো রেট কাকে বলে?
উত্তর: রিভার্স রেপো রেট হল এমন এক ধরনের ব্যাংক রেট যার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক (RBI) বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির থেকে ঋণ নেয়। রিভার্স রেপো রেটের বৃদ্ধি বা হ্রাস ঘটলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির আয়ও তার সাথে বাড়ে বা কমে।
প্রশ্ন ৩৯: বিধিবদ্ধ তারল্যের অনুপাত (বা Statutory Liquidity Ratio বা SLR) কাকে বলে?
উত্তর: বাণিজ্যিক ব্যাংককে আইন অনুযায়ী নিজের কাছে তাদের আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ তরল নগদ, সোনা বা অন্যান্য সিকিউরিটিজ আকারে জমা রাখতে হয়। একেই বিধিবদ্ধ তারল্যের অনুপাত (বা Statutory Liquidity Ratio বা SLR) বলে।
প্রশ্ন ৪০: ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বলতে কি বোঝ?
অথবা,
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কাকে বলে?
উত্তর: বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি যাতে প্রয়োজনে বেশি করে বা কম করে ঋণ দেয়, সেইজন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হতে কতগুলি অস্ত্র আছে, এগুলিকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বলে।
প্রশ্ন ৪১: ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তর: ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
ক. পরিমাণগত ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
খ. নির্বাচনমূলক ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির বা গুণগত ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
প্রশ্ন ৪২: পরিমাণগত ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কাকে বলে?
উত্তর: ব্যাংক রেট, খোলা বাজারের কার্যকলাপ, নগদ জমার অনুপাতে পরিবর্তন এই তিনটি ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিকে পরিমাণগত ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বলে।
প্রশ্ন ৪৩: ব্যাংক রেট কাকে বলে?
উত্তর: বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে দীর্ঘকালীন ঋণ নেয় তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির ক্ষেত্রে যে সুদের হার ধার্য করে তাকে ব্যাংক রেট বলে।
অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হারকে ব্যাংক রেট বলে।
প্রশ্ন ৪৪: খোলা বাজারের কার্যকলাপ কাকে বলে?
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক বাজার থেকে সরকারি ঋণপত্রগুলিকে কিনে নেওয়া বা বাজারে সরকারি ঋণপত্র বিক্রি করাকে খোলা বাজারের কার্যকলাপ বলা হয়।
প্রশ্ন ৪৫: নগদ জমার অনুপাত (Cash Reserve Ratio বা CRR) কাকে বলে?
অথবা,
পরিবর্তনশীল জমার অনুপাত (Variable Reserve Ratio বা VRR) কাকে বলে?
উত্তর: বাণিজ্যিক ব্যাংককে আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে তাদের আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ জমা রাখতে হয়। একেই নগদ জমার অনুপাত (Cash Reserve Ratio বা CRR) বলে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ঋণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নগদ জমার অনুপাতকে পরিবর্তিত করে থাকে। তাই অনেক সময় নগদ জমার অনুপাতকে পরিবর্তনশীল জমার অনুপাত (Variable Reserve Ratio বা VRR) বলা হয়।
প্রশ্ন ৪৬: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাচনমূলক ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির (বা গুণগত ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি) হাতিয়ারগুলি কি কি?
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাচনমূলক ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির (বা গুণগত ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি) হাতিয়ারগুলি হল:
ক. নগদ মার্জিন পরিবর্তন;
খ. ঋণের রেশনিং;
গ. নৈতিক প্রণোদন;
ঘ. প্রত্যক্ষ ব্যবস্থা।
প্রশ্ন ৪৭: কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক রেট কখন বৃদ্ধি করে?
উত্তর: মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক রেট বৃদ্ধি করে।
প্রশ্ন ৪৮: ভারতবর্ষে নোট প্রচলনের একছত্র অধিকার কার আছে?
উত্তর: রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI)
প্রশ্ন ৪৯: শূন্যস্থান পূরণ করো:
ক. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারা ঋণ নিয়ন্ত্রণের একটি হাতিয়ারের নাম _________।
খ. ভারতে 200 টাকার কাগজি নোট _________ অর্থের উদাহরণ।
গ. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হারকে _________ রেট বলা হয়।
ঘ. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি নির্বাচনমূলক ঋণ নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হল _________।
ঙ. আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার (IMF)-এর সকল হিসাব _________ নামক মুদ্রায় প্রকাশ করা হয়।
চ. _________ সঞ্চয়ের ভান্ডার হিসাবে কাজ করে।
ছ. মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক রেট _________ করে।
জ. বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করা _________ এর একটি কাজ।
ঝ. _________ অর্থের ক্ষেত্রে মুদ্রিত মূল্য অন্তর্নিহিত মূল্য অপেক্ষা বেশি হয়।
ঞ. খোলা বাজারে কার্যকলাপ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের _________ নিয়ন্ত্রণের একটি পদ্ধতি।
ট. অর্থের যোগানের মধ্যে _________ আমানতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
উত্তর:
ক. পরিবর্তনশীল জমার অনুপাত
খ. নিদর্শন বা টোকন
গ. ব্যাংক
ঘ. নগদ মার্জিন পরিবর্তন
ঙ. Special Drawings Rights বা SDR
চ. অর্থ
ছ. বৃদ্ধি
জ. অর্থের
ঝ. নিদর্শন বা টোকন
ঞ. ঋণ
ট. চলতি